ভোলা প্রতিনিধি, ২৩ মাঘ (৬ ফেব্রুয়ারি) :
ভূমিহীন অসহায় ও ক্ষেত মজুর পরিবারকে ৪৫ বছরের ভোগদখলীয় খাস জমি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে পরিকল্পীতভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। চরফ্যাশন উপজেলার রাঢ়ির দোকান সংলগ্ন এলাকার দক্ষিণ চর নাজিমউদ্দিন মৌজার জেএল নং ২৯ ও ১নং খাস খতিয়ানের ৩০০৭ নং দাগের ২৬ শতাংশ জমিতে নদী ভাঙনের শিকার একটি অসহায় পরিবার দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বসতবাড়ি ও গাছপালা সৃজন করে ভোগদখলে থাকলেও একই এলাকার প্রভাবশালী ব্যাক্তির ওই জমি সংলগ্ন ক্রয়কৃত জমি থাকায় অসহায় পরিবারটিকে উচ্ছেদে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কৌশলে ওই জমি থেকে বেদখল করে জোর জবর দখলের পায়তারা করছে বলে স্থানিয় একাধীক এলাকাবাসী ও ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। ভূক্তভোগী আলি হোসেন ঘরানি (৫২) বলেন, আমি ও আমার পরিবার ৭০ এর বন্যার কয়েক বছর পরে ভোলার উত্তর শাহবাজপুরের নদী ভাঙনকবলীত এলাকা থেকে এই অঞ্চলে আসি। তৎকালীন সময় থেকে খালের কিনারায় এই খাস জমিতে আমি ও আমার পরিবার ভোগদখল করে আসছি। তিনি আরো বলেন,আমি একজন ক্ষেত মজুর। ৫ছেলে মেয়ে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবন যাপন করছি। আমাদের স্থানীয় প্রভাবশালী গোফরান চৌধুরী এবং তাঁর ছেলে ইকবাল চৌধুরী ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা আমাকে এই জমি থেকে বেদখল করতে প্রায় সময় স্থানীয় ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে হুমকি ধমকিসহ নানান অকথ্য ভাষায় গলমন্দ করে যায় যেন এই জমি ছেড়ে আমরা চলে যাই। গত জানুয়ারী মাসে গোফরান চৌধুরী ও তাঁর ছেলে আমার বসতবাড়ি সংলগ্ন জমিতে ড্রেজিং করে জলাশয় পুকুর খনন করে। এতে আমার বসতবাড়ি সিমানা বরাবর এমনভাবে ড্রেজিং করে যে আমার জমির মাটিও ভেঙে ওই জলাশায় পুকুরে পরে যায়। আমি এসময় ঘরের সদাই করার জন্য বাজারে অবস্থান করি। পরিকল্পনা ছাড়া ড্রেজিং এ আমার জমির মাটি ভেঙে পড়ার বিষয়ে আমার মেয়েরা সংশ্লীষ্টদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁরা আমার মেয়েকে মারধর করতে খন্তা,কুঠার ও শাবল নিয়ে তেড়ে আসে। আমার সন্তানদের প্রাণনাষের হুমকি ধমকিসহ উল্টো আমাকে ও আমার পরিবারকে মামলায় জর্জরিত করে জেলের ঘানি টানানোর হুমকি দেয় গোফরান ও ইকবাল চৌধুরীসহ তাঁদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী। এর কিছুদিন পরে আমার কাছে নোটিশ আসে যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১০৭/১১৭ (সি) ধারায় একটি মামলা করেছে গোফরান চৌধুরী। এছাড়াও তিনি বিগত দিনেও স্থানিয় মানুষকে ইন্দোন দিয়ে আসছে আমাকে মামলায় জড়ানোর জন্য। স্থানীয় প্রতিবেশি আবু তাহের,ফাতেমা বেগম,খোরশেদ মাঝিসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক ব্যাক্তি বলেন, আলি হোসেন বসত বাড়ি স্থাপনের প্রায় ২০ বছর পরে গোফরান চৌধুরী আলি হোসেনদের বসতবাড়ি সংলগ্ন কিছু জমি ক্রয় করে। তবে আলি হোসেনকে উচ্ছেদ করতে গোফরান চৌধুরী ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়েছে। এছাড়াও এমন আরো একাধীক ব্যাক্তিকে গোফরান চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের লোকজনেরা মামলা হামলাসহ নানানভাবে অত্যাচার নির্যাতন করছে বলেও এলাকাবাসীরা অভিযোগ জানান। এ বিষয়ে গোফরান চৌধুরী বলেন, আলি হোসেনদের বাড়িঘর না থাকায় আমি জমি দেখাশুনার জন্য আমার জায়গায় থাকতে দিয়েছি। গত ১২ জানুয়ারী আমার পুকুর থেকে আমরা মাছ ধরতে গেলে আলি হোসেন ও তাঁর ছেলে মেয়েরা আমাকে জখমের উদ্দেশ্যে আক্রমন করে। যার ফলে আমি মামলা দিয়েছি।