‘বাংলাদেশে হিন্দুদের মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে’- এমন দাবি জানিয়ে একটি ভিডিও ফুটেজ নিজেদের এক্স অ্যাকাউন্টে প্রচার করেছে ভারতীয় একটি গণমাধ্যম আরটি ইন্ডিয়া। তবে তথ্যটি সত্য নয় বলে জানিয়েছে ফ্যাক্ট চেক বা তথ্য যাচাই সংস্থা রিউমার স্ক্যানার।

রিউমার স্ক্যানার বলেছে, মন্দিরে হামলা–ভাঙচুরের ওই ভিডিও ফুটেজ মন্দিরে হামলা কিংবা ভাঙচুরের নয় বরং বর্ধমানের মন্দিরের ধর্মীয় আচার পালনের ভিডিও এটা। এটাকে বাংলাদেশের মন্দিরে ভাঙচুরের ভিডিও হিসেবে প্রচার করা হয়েছে।

তাদের টিম অনুসন্ধানে জানতে পারে, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশে মুসলিম কর্তৃক হিন্দুদের মন্দিরে হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুরের নয়। এমনকি ভিডিওটি বাংলাদেশেরই নয়, ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ গ্রামে প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য এটি।

রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে ‘রঘুব সাথী’ নামক একটি ভারতীয় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৩০ নভেম্বর প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা ভিডিওর দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

উক্ত পোস্টে হ্যাশট্যাগ হিসেবে ‘সুলতানপুর কালীমাতা নিরঞ্জন’ উল্লেখ করা হয়। এর সূত্রে অনুসন্ধানে ‘dey_raghu’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৩০ নভেম্বরই প্রচারিত আরেকটি ভিডিও পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে বলা হয়, সুতলানপুর ১২ বছর অন্তর কালীমাতা নিরঞ্জনের দৃশ্য এটি।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে ‘সুলতানপুর কিরনময়ী পাঠাগার’ নামক একটি ভারতীয় পেজ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পেজ পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, গত ২৫ নভেম্বর ‘১২ বছর অন্তরঐতিহ্যের কালীমাতা নিরঞ্জন ২০২৪’ আয়োজন করে ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ সুলতানপুরের কিরণময়ী পাঠাগার এবং সুলতানপুর গ্রামবাসীবৃন্দ।

এছাড়া, পল্লী দামোদর নামক একটি ভারতীয় স্থানীয় গণমাধ্যমের পেজে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, খণ্ডঘোষ সুলতানপুরের মণ্ডলবাড়িতে দীর্ঘ ১২ বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয় কালীমাতা নিরঞ্জন। সুতরাং, ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্যকে বাংলাদেশে মুসলিম কর্তৃক হিন্দুদের মন্দিরে হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।