মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি
মাদারীপুরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করার দাবীতে প্রতীকী গণঅনশন করেছে স্থানীয় সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে মাদারীপুর শহরের লেকেরপাড় শহীদ কানন চত্বরে নিরাপদ চিকিৎসা চাই, মাদারীপুর জেলা শাখার আয়োজনে এই গণঅনশন পালন করা হয়। দুই ঘন্টাব্যাপী চলা এই প্রতীকী গণঅনশনে ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড হাতে নিয়ে ৫০০ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ এতে অংশ নেয়।
এ সময় সেচ্ছাসেবী সংগঠন এর নেতৃবৃন্দগন বক্তব্যে বলেন, ‘‘মাদারীপুরে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি সদর হাসপাতাল রয়েছে। এখানে প্রতিদিন ২০০-২৫০ রোগী চিকিৎসার জন্য ভর্তি থাকে। এখানে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ রোগী চিকিৎসার জন্য আসে। ধারণ ক্ষমতার থেকে ২-৩ গুণ রোগী বেশি ভর্তি হয়। অধিকাংশ সময় রোগীদের পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। অধিকাংশ সময় রোগীদের ফ্লোরের বারান্দায় এবং সিড়িতে রাত্রীযাপন করতে হয়। যা অত্যান্ত মর্মান্তিক এবং দু:খজনক। এ ছাড়া মাদারীপুর সদর হাসপাতালের উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জাম আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং অভিজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় অধিকাংশ সময় রোগীদেরকে ফরিদপুর, বরিশাল এবং ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। সেচ্ছাসেবী সংগঠন এর নেতৃবৃন্দ আরো বলেন সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. নুরুল ইসলামের তথ্যমতে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে মাত্র ১৩ জন চিকিৎসক রয়েছে। সাড়ে ১২ লক্ষ মানুষের এই শহরে ১৩ জন চিকিৎসক মানুষের সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছুই না। রোগীদের কথা চিন্তা করে ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর মাদারীপুর সদর হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শুরু করে। ২০১৯ সালের শুরুতে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও আমরা যতদূর জেনেছি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে হাসপাতালটি এখনও চালু হয়নি। হাসপাতালটি এখনও চালু না হওয়ায় একদিকে আমরা যেমন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি অন্যদিকে সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। হাসপাতালটি ইতিমধ্যেই ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। তাই আমি কর্তৃপক্ষকে অুনরোধ করবো অতিদ্রুত হাসপাতালটি চালু করে দিন। চিকিৎসা সেবা আমার মৌলিক অধিকার, চিকিৎসা সেবা আমার জন্মগত অধিকার, আমি জন্মের পরপরই আমি আমার এই অধিকার প্রাপ্য। অতএব দায়িত্বশীলদেরকে বলবো আজকের এই আন্দোলন অহেষ্ণু আন্দোলন, এই আন্দোলন কে সহিষ্ণু আন্দোলনে রূপ দেবেন না। তাহলে ফলাফল ভালো হবে না।’’
প্রতীকী অনশনে ‘‘হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট ও প্যাথলজিষ্ট পর্যাপ্ত পরিমানে নিয়োগ দিতে হবে’’ ‘‘আর কত? লাশ পেলে হাসপাতালের তালা খুলে দেবে?’’ ‘‘প্রতিটি মানুষের নিরাপদ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে,’’ ‘‘চিকিৎসার নামে হয়রানি বন্ধ করা হোক,’’ নানা শ্লোগান লেখা প্লাকার্ড হাতে নিয়ে গণঅনশনে অংশ নেয় সকল সেচ্ছাসেবী সংগঠন নেতৃবৃন্দসহ অন্যরা। এতে নেতৃত্ব দেন নিরাপদ চিকিৎসা চাই, মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি এ্যাডভোকেট মশিউর রহমান পারভেজ।