এক দেশে এক রাজপুত্র ছিলো। রাজপুত্রের খুব শিকার করার নেশা ছিলো। একদিন সে ঘোড়ায় চেপে শিকারের উদ্দেশ্যে বের হল। গহীন বনের মধ্যে সে দেখল একটি হরিণ শাবক লাফিয়ে লাফিয়ে ঘাস খাচ্ছে। রাজপুত্র তীর ধনুক তাক করল হরিণ শাবকের দিকে কিন্তু কিছুতেই লক্ষ্য স্থির করতে পারল না। কারণ শাবকটি খুব তিড়িংতিড়িং করে ছোটাছুটি করে ঘাস খাচ্ছিল। একটা সময়ে রাজপুত্র খেয়াল করল হরিণ শাবকটি তার দিকে ছুটে আসতেছে। শাবকটি রাজপুত্রের কাছে এসে তীর ধনুক শুকে দেখা শুরু করল, এমনকি রাজপুত্রের গায়ের সুগন্ধি ঘ্রাণ নেওয়া শুরু করল… রাজপুত্রের খুব মায়া হলো হরিণ শাবকের আচরণ দেখে। রাজপুত্র তখন ওই হরিণ শাবকটিকে কোলে নিয়ে রাজপ্রাসাদে ফিরল। রাজপ্রাসাদে ফিরে শাবকটির গলায় একটি স্বর্নের ঘন্টা বেঁধে দিল। শাবকটি ছমছম করে রাজপ্রাসাদের এদিক ওদিক ছোটাছুটি করতে লাগল আর তার গলার ঘন্টার আওয়াজে মুখরিত হতে থাকল রাজপ্রাসাদ। প্রথমদিন খুব আনন্দে কাটল সবার। দ্বিতীয়দিন দেখা গেল শাবকটি আর আগের মতো ছোটাছুটি করছে না, কিছু খাচ্ছেও না শুধু এক জায়গায় শুয়ে রইল। রাজপুত্র বুঝতে চেষ্টা করল হরিণ শাবকের মনের অবস্থা। ঠিক এমন সময় রাজপ্রাসাদের দরজায় দেখা গেল একটি মা হরিণকে। রাজপুত্রের আর বুঝতে দেরি রইল না যে হরিণ শাবকটির মা তাকে খুঁজতে খুঁজতে প্রাসাদ অবধি চলে এসেছে। মা কে দেখে শাবকটির মনে খুশি আর ধরে না! শাবকটি তিড়িংতিড়িং করে নাচতে নাচতে মায়ের কোলের মধ্যে চলে গেল। আর মাও নিজের হারিয়ে যাওয়া বাচ্চাকে ফিরে পেয়ে বাচ্চার কপালে অনেক চুমু খেতে লাগল। তারপর মা ছা মিলে হাঁটতে শুরু করল বনের দিকে। সবাই বলল শাবকটিকে প্রাসাদ ছেড়ে যেতে না দিতে। কিন্তু রাজপুত্র সবাইকে বুঝিয়ে বলল, কারো মায়ের কোল থেকে তার সন্তানকে ছিনিয়ে নেওয়াটা অন্যায়। আর তাছাড়া বন্যেরা বনে সুন্দর আর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। সবাই রাজপুত্রের কথার গভীরতা অনুভব করতে পারল।