১৩ শ্রাবণ (২৮ জুলাই) :
যশোর জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি রাজু রানার মাদক সেবনের ভিডিও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে তাকে একটি বাড়ির সিঁড়ির উপরে বসে ফেনসিডিল সেবন করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওতে ছাত্রলীগনেতা রাজু রানা ছাড়াও অন্যদের উপস্থিতি থাকলেও তাদের মুখ দেখা যাচ্ছে না। তবে সবাই জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এক মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ফেনসিডিল সেবনের ভিডিওটি বুধবার দুপুর থেকে ফেসবুকে প্রকাশের পর সমালোচনার ঝড় ওঠেছে। এ নিয়ে যশোর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে নিন্দা এবং সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে ভিডিওটি মাদক বিরোধী তিন পর্বের একটি নাটকের অংশ দাবি করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগনেতা রাজু রানা।জেলা মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম রয়েল তার ফেইসবুক আইডিতে ফেনসিডিল সেবনের ভিডিওটি আপলোড দেন। এক মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ভিডিওটি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন ‘রাজু রানা (সহ-সভাপতি যশোর জেলা ছাত্রলীগ) এই যদি হয় ছাত্রনেতার চরিত্র! অবিলম্বে মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীর হাত থেকে যশোর জেলা ছাত্রলীগ কলঙ্ক মুক্ত করা হোক। এবং তাদের গডফাদারদের চিহ্নিত করা হোক। রাজু রানা (পিতা-বজলুর রহমান পেশা ইজিবাইক চালক) গ্রাম-ঝুমঝুমপুর, চাঁনদের মোড়।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, নেশার ঘোরে বারবার ফেনসিডিলের বোতল ঘুরাচ্ছে ছাত্রলীগনেতা রাজু রানা। ভিডিও’র বাইরে থাকা এক যুবককে বলতে শুনা যায় ৮৮ নাম্বার ঠিক আছে। আরেক একটা নিয়ে আসেন। বোতলটি নিয়ে আসলে যুবকটি বলেন ওরে বাবা এটাই তো লাগবে। এর পর একটি ফেনসিডিলের বোতল রাজু রানাকে অনেকবার ঘুরাতে দেখা যায়। মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওটি যিনি ধারণ করছিলেন তিনি একটি মুখখোলা ফেনসিডিলের বোতল রাজু রানার কাছে এগিয়ে দেন। এর পর রাজু রানাকে সেটা সেবন করতে দেখা যায়। সেটি শেষ করে আরেকজনকে আরেক বোতল আনতে নির্দেশ দেন রাজু রানা। এর পর আরেকটি বোতল সেবন করতে দেখা যায়। এসময় রাজু রানার সঙ্গে থাকা আরো কিছু যুবককে টাকা গুনতে শোনা যায়। বলতে শোনা যায়, ‘আর টাকা নেই। এগুলো তাই বাকী খেলাম। এগুলো রাখেন।‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও নিজের নিশ্চিত করে জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি রাজু রানা বলেন, ‘আমরা মাদক বিরোধী তিন পর্বের একটি নাটক নির্মাণ করেছি। ভিডিওটি সেই নাটকের একটি পর্বের অংশ। নাটকটি প্রকাশ হওয়ার আগেই এডিটিং করে কম্পিউটারের দোকান থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে কেউ এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে ভিডিও কোথায় কবে কখন ধারণ করা সেটা তিনি বলতে রাজি হননি। এই বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস, সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মাদক সেবনের ভিডিওটি আমি দেখেছি। তবে তিনি ছাত্রলীগের সহ সভাপতি কিনা সেটা বলতে পারবো না। ভিডিওটি দেখছি ওই পর্যন্তই। কারণ মাদকসহ কাউকে গ্রেফতার করতে না পারলে কারোও উপর আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারি না। তার পরেও আমি খোঁজ খবর রাখছি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।