সবুজ বাংলাদেশ প্রতিবেদন:

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার চিত্র বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ‘দ্যা মাইন্ড বিহান্ড দ্যা মিরাক্যাল’ চেঞ্জ স্টোরি ফরম দ্যা বেঙ্গল হিন্টারল্যান্ড শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক এখন বলছে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বের অনুপ্রেরণা। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ সাফল্য উদাহণ হিসেবে তুলে ধরছে ইউইয়র্ক টাইমসসহ বিশ্বের গণমাধ্যমগুলো। বাংলাদেশ এভাবেই এগিয়ে যাবে।

পৃথিবীর কোনে নেতা এতো ত্যাগ স্বীকার করেননি, যা শেখ হাসিনা করেছেন জানিয়ে অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, তার পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যার বিচার হতে দেওয়া হয়নি। ১৯ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আর এটি করা হয়েছে কারণ তিনি জনগণের ভালো করতে চেয়েছেন, গণতন্ত্র ফেরত আনতে চেয়েছেন, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ বন্ধ করতে চেয়েছেন। আজকে অনেকেই আমাদেরকে বলেন যে আমাদের এটা-ওটা করা উচিৎ। স্বাভাবিক ভাবেই শেখ হাসিনা ন্যয্যতা প্রতিষ্ঠা করবেন। কারণ যাতে কাউকে তাদের স্বজনদের না হারাতে হয়। এ সময়ে বিভিন্নখাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন আবদুল মোমেন।

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে মূল প্রবন্ধে ড. আতিউর রহমান বলেন, শত বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্থানীয় ও বৈশ্বিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশের ক্রমাগত উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্তিশালী নেতৃত্বের কারণে। বাংলাদেশকে শ্রীলংকার সঙ্গে অনেকে তুলনা করলেও এ তুলনা ভিত্তিহীন। কারণ প্রবৃদ্ধির আনুপাতিক ঋণ অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়াসহ অনেক দেশের থেকে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এ সময়ে তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ওপর আস্থা রাখতে আহ্বান জানান।

স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ বলেন, ৫০ বছর আগে বাংলাদেশ একটি বিধ্বস্ত দেশ ছিল। তবে সেই দেশের নেতৃত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান‘সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন অনেকদূর বাস্তবায়ন করেছেন এবং করে যাচ্ছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে সরকারের নানা পদক্ষেপ ও উন্নয়নের চিত্র নিয়ে একটি তথ্যচিত্র পদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক উপ কমিটির চেয়ারম্যান এমব্যাসেডর জমির।

এসময় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে সভাপতি মন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সবুর, দপ্তর সম্পাদক ব্যারবস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জার্মানির রাষ্ট্রদূত অছিম ট্রস্টার, ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজিয়াতা, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুয়ার, চায়না রাষ্ট্রদূত লি জিমিং, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বার্ন্ড স্প্যানিয়ার তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তাফা ওসমান তুরান সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পাক সং ইয়োপ, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং কুয়েন, আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত রাবাহ লারবি, পাকিস্তানের ডেপুটি রাষ্ট্রদূত কামর আব্বাস খোকার, পাকিস্তান দূতাবাসের পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সোলাইমান খান, সুইজারল্যান্ড এর ডেপুটি রাষ্ট্রদূত সুজান মুলার এবং বাংলাদেশে অবস্থিত ইউএসএ, ভিয়েতনাম, রাশিয়া, থাইল্যান্ড, বৃটিশ দূতাবাসের প্রতিনিধিবৃন্দ।

আলোচনা পর্বের পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।

ডিসেম্বরে রাজপথ দখল বিএনপির রঙিন খোয়াব: এদিকে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ডিসেম্বর মাসে তারা রাজপথ দখল করবে তাদের রঙিন খোয়াব ছাড়া আর কিছুই না।

তিনি বলেন, এটা বিএনপির রঙ্গিন খোয়াব। অচিরেই কর্পূরের মত উড়ে যাবে। খুলনার বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকারের পক্ষ থেকে পরিবহন বন্ধের কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

সমাবেশকে কেন্দ্র করে গ্রেফতার-হয়রানি নিয়ে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকে, কারো বিরুদ্ধে সন্ত্রাস -খুনের মামলা রয়েছে। এখন এ সমাবেশ উপলক্ষে এরা মাঠে আসবে। তাদের পুরানো অভ্যাস রয়েছে আগুন সন্ত্রাস করার। খুলনায় সন্ত্রাসীদের বিএনপি জড়ো করেছে- এসব খোঁজ পেলে, তল্লাসী তো করতেই হবে।