মোঃ হায়দার আলী,রাজশাহী:
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : দক্ষিণা ঝড় ও ভারী বৃষ্টিতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় জেলেদের নৌকা-জালসহ পদ্মানদীতে ডুবে গেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২ টার পর হঠাৎ করেই বৃষ্টির সাথে ঝড় হাওয়া শুরু হয়।
এতে করে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মাটিকাটা দেওয়ান পাড়া এলাকায় পদ্মানদীর তীরে জেলেদের প্রায় শতাধিক নৌকা ঘাটে বাঁধা ছিলো। প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ে স্রোতের কবলে পড়ে প্রায় ১৫ জন জেলের নৌকা পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে করে প্রতিটি জেলে প্রায় দুই লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
নৌকা হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ জেলেরা হলেন, মাদারপুর দেওয়াপড়া এলাকার সাইফুলের ছেলে আরমান ও সুরমান, আব্দুল বারীর ছেলে বাবু বাঘা, সফিকুল ইসলামের ছেলে মুরসালিন, আব্দুস সালামের ছেলে মহবুল ইসলাম, নইমুদ্দিনের ছেলে সাব্বির হোসেন, আতার উদ্দিনের ছেলে সুমন আলী, সেফান আলীর ছেলে মূলক চাঁন ও সাহাবুল, মতিউরের ছেলে কবির হোসেন ও শুকুরুদ্দীনের ছেলে কামাল উদ্দিন।
দেওয়ানপাড়া এলাকার জেলে জামাল উদ্দীন জানান, আমার জেলে জীবনে কোন বছর এমন পানি ও দক্ষিণা ঝড় দেখিনি। তবে এবার প্রচন্ড বৃষ্টি ও ঝড়ের কারনে নদী তীরে বাঁধা প্রায় ১৫টি নৌকা তলিয়ে গেছে। সকালে নদী তীরে এসে দেখি নৌকা গুলি নাই। পরে যেখানে নৌকা বাঁধা ছিলো সেখানে পানির নিচে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। ধারণা করা হচ্ছে স্রোতের তরে ভেসে গেছে যা আর পাওয়া সম্ভব না।
জেলে মুরসালিন বলেন, আমরা এনজিও থেকে কিস্তি নিয়ে ও মাহজনদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে নৌকা- জাল বানিয়ে এই বর্ষা মৌসুমে নদীতে মাছ ধরতে যায়। অন্যান্য সময় নদীতে মাছ তেমন পাওয়া না গেলেও এই মৌসুমের অপেক্ষায় থাকি। এই মৌসুমে বেশী মাছ পাওয়ায় সারা বছরের ইনকাম কোন রকম হয়। তবে হঠাৎ এই ঝড়ে নৌকা গুলো পানির তলে হারিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। মাথায় এখন চিন্তা কি করে কিস্তি চালাবো ও মহাজনদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা পরিশোধ করবো। সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোন সহযোগিতা পাওয়া যেতো তাহলে আমাদের কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব হতো।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বরুণ কুমার মন্ডন বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী মাছ ধরার সময় কোন জেলে যদি আহত হয় সেক্ষেত্রে ৩০ হাজার নিহত হলে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার বিধান রয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে দেওয়ার কোন নিয়ম নেই। তবে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের নাম ঠিকানা দিলে কোন সুযোগ থাকলে তা দেখা হবে বলে জানান।