ঢাকা, ৩ মাঘ (১৭ জানুয়ারি) :
নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে
আলোচনায় অংশ নেয়।
বঙ্গভবনের দরবার হলে অনুষ্ঠিত আলোচনায় প্রতিনিধিদল একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন
কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নসহ তাদের প্রস্তাবসমূহ পেশ করে। তারা বলেন, সংবিধানের ১১৮
অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের
নিয়োগ দেবেন। রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করবেন সেই প্রক্রিয়ায় তিনি প্রধান নির্বাচন
কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন। তারা অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ
নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল নির্বাচনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। এছাড়া
প্রতিনিধিদল একটি স্বাধীন ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচনকালীন নির্বাহী
বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করা, ছবিযুক্ত
নির্ভুল ভোটার তালিকা, ভোটকেন্দ্রে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভোটগ্রহণে ইভিএম
এর ব্যবহার বৃদ্ধিরও প্রস্তাব করেন।
প্রতিনিধিদল এ সময় নির্বাচন পরিচালনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-
কর্মচারীদের পরিবর্তে কেবলমাত্র প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রিজাইডিং
অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিতদের দায়িত্বশীল আচরণ
নিশ্চিত করার প্রস্তাব দেন। নির্বাচনে পেশীশক্তির প্রয়োগ বন্ধ এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু
সম্প্রদায়সহ সকল পর্যায়ের ভোটারদের অবাধ ভোটপ্রদানের সুযোগ নিশ্চিত করার প্রস্তাব
করেন। নির্বাচনের পূর্বে ও পরে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নির্বাচনকালে প্রশাসন ও
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত করা এবং নির্বাচনকালীন
সরকারের কার্যক্রম রুটিন দায়িত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়টিও প্রতিনিধিদল তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার
উদ্যোগ নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও
নিরপেক্ষভাবে করা যায় এবং জনগণ যাতে স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তা
নিশ্চিত করতে তার দল ও সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী জানান,
আজকের মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনে
আইনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দ্রুত আইনটি প্রণয়নের অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন
করা হবে।
নির্বাচন কমিশন গঠনে সুচিন্তিত মতামত প্রদানের জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে
ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পঁচিশটি রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার প্রেক্ষিতে
নির্বাচন কমিশন গঠনের পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত
আইন মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে অনুমোদন দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা প্রকাশ
করেন, আইনটি দ্রুত জাতীয় সংসদে পাস হবে এবং এ আইনে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ
উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মোঃ
ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।