ঢাকা, ২৮ চৈত্র (১১ এপ্রিল):

যানজট নিরসনে রাস্তায় বিভিন্ন দোকানপাট বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে হবে
বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।

আজ রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স
এসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত ‘অসহনীয় যানজট: সমাধান কী’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে
মন্ত্রী একথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর অধিকাংশ জায়গায় দেখা যায় রাস্তা দখল করে দোকান-পাট বসানো হয়েছে।
আবার রাস্তার উপরে যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়, যা ট্রাফিক জ্যামের অন্যতম কারণ। যারা
রাস্তার উপরে গাড়ি রাখবে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা
বাহিনীকে আরো কঠোর অবস্থান নিতে হবে। তিনি জানান, ট্র্যাফিক জ্যাম বিশ্বের সকল দেশেই আছে।
অনেক দেশ কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। সমস্যা চিহ্নিত করে দেশে সমাধান
খুঁজতে হবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, রাস্তা না রেখে শুধু বড় বড় বিল্ডিং করলে এবং ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বাড়লে
রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম হওয়াটাই স্বাভাবিক। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। পাবলিক
ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারে সবাইকে উৎসাহী করতে হবে। তিনি বলেন, ট্র্যাফিক জ্যাম নিরসন করা একক
কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। ট্রাফিক আইন মানার বিষয়ে মানুষকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।
মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, ঢাকা শহরে কত মানুষ বসবাস করবে তা ঠিক করা জরুরি। ঢাকা ডিটেল্ড
এরিয়া প্লান (ড্যাপ) সে লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হচ্ছে। ঢাকাকে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। মূল ঢাকায় না থেকে
যাতে মানুষজনকে সম্প্রসারিত এলাকা স্থানান্তর করা যায় সে ব্যাপারে উৎসাহিত করতে হবে। এ প্রসঙ্গে
তিনি আরো বলেন, ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার লোক আসছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো তাদের মূল
শহরে বসবাসের কস্ট বাড়িয়েছে। এতে মানুষজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় থাকে এবং সকাল বেলা কর্মক্ষেত্রে
চলে আসে। ঢাকায় থাকার লিভিং কস্ট এবং গ্রামে থাকার লিভিং কস্ট যদি প্রায় সমান হয় তাহলে ইনকাম
এবং সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার আশায় মানুষ ঢাকায় আসবে এটাই স্বাভাবিক। জোনভিত্তিক পানি, গ্যাস,
হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করার ব্যবস্থা করতে হবে।

পরে সাংবাদিকরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উপজেলাতেও ট্রাফিক জ্যাম হবে সংসদে এমন
মন্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত
হবে। সকলের গাড়ি ক্রয় করার সামর্থ্য হবে। সে ক্ষেত্রে আমরা যদি এখন থেকে পরিকল্পিতভাবে
অবকাঠামো এবং রাস্তাঘাট নির্মাণ না করি তাহলে উপজেলাতেও ট্রাফিক জ্যাম হতে পারে বলে আমি
বলেছিলাম।

ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের নিকট ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা হস্তান্তর করা হবে কি না এমন প্রশ্নের
উত্তরে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিটি কর্পোরেশন নিজেদের অর্থায়নে এয়ারপোর্ট বানিয়েছে,
সাবওয়ে নির্মাণ করেছে। আমাদের দুই সিটি কর্পোরেশন মেয়রের কাজ করার অনেক আগ্রহ রয়েছে।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করার সক্ষমতা আছে কি না তা দেখতে হবে।
ডুরার সভাপতি রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিকের সঞ্চালনায়
অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বুয়েটের পরিবহণ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোঃ শামসুল হক। নগর
পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ড্যাপের প্রকল্প
পরিচালক আশরাফুল ইসলাম অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।