শিশুশ্রম রোধে প্রয়োজন সম্মিলিত পদক্ষেপ

আজহার মাহমুদ

শিক্ষার্থী, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আগামী দিনে দেশের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে আজকের শিশুরাই। একটি শিশুকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে প্রথমেই শিশুর পারিবারিক ও সামাজিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান আইনে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্ত, বাংলাদেশে দিন দিন বেড়েই চলছে শিশুশ্রম। হাজার হাজার শিশুশ্রম দিচ্ছে কলকারখানায়, গ্যারেজে, হোটেলে, রিকশা-টেম্পোর ওয়ার্কশপে। আবার অনেক শিশুকে দেখা যায় বাস ও টেম্পোর হেল্পারের কাজও করতে। ‘বাংলাদেশে শিশুশ্রমের অবস্থান’ শীর্ষক এক সমীক্ষায় শিশুশ্রমের কারণ হিসেবে যে কারণগুলো দেখানো হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চরম দারিদ্র্য, পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীর মৃতু্য, পিতৃবিয়োগ, বাবা-মা পরিত্যাজ্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি। কিন্তু, এভাবে কতদিন? দেশে এত এত এনজিও, সংগঠন, প্রতিষ্ঠান আছে; কিন্তু এতে শিশুশ্রম রোধে কোনো কিছুই হচ্ছে না। বরং দিন দিন এটা বেড়েই চলছে। এই শিশুশ্রম রোধে প্রয়োজন সরকার, প্রশাসন সবার সম্মিলিত পদক্ষেপ এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। তবেই শিশুরা রেহাই পেতে পারে।

শিশুদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক

খায়রুজ্জামান খান সানি

শিক্ষার্থী, টু্যরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

রঙিন মলাটের বই আর কলম হাতে স্কুলে যাওয়ার এই বয়স বিবর্ণ হচ্ছে বাস্তবতার মলাটে। মানুষ আজ লোভী পশুদের মতোই মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। অর্থের লালসার রাজ্যে মুক্তি নেই শিশুদেরও। ‘আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’ স্স্নোগান শুধু কানেই বাজে। বাস্তবতাটা একদম ভিন্ন। কলকারখানায় অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য মালিকরা যেন শিশুশ্রম আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাদের কাজ হাসিল করে চলছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা ২০২৫ সালের মধ্যে সব শ্রেণির শিশুশ্রম বন্ধ ও উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে সরকারকে যুগোপযোগী নীতিমালা প্রয়োগের পাশাপাশি আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। শিশুশ্রম নিরসনের জন্য শিশুর আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। শিশুশ্রম বন্ধে আইনের প্রতি কঠোর দৃষ্টি প্রয়োগ করতে হবে। কাগজে-কলমে আইন প্রণয়ন না করে শিশুশ্রম মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে নিতে হবে সমন্বিত কার্যক্রম।

শিশুশ্রম রোধে যথাযথ আইন প্রয়োগ ও সচেতনতা জরুরি

সাদিকুর সাদিক

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

শিশুশ্রম বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে প্রধান বাধাগুলোর একটি। যেখানে বলা হয়, ‘আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’ সেখানে আমাদের চারদিকে শিশুশ্রম বেড়ে যাওয়া; দেশের ভবিষ্যতের জন্য এক অশনি সংকেত।

যেই সময়টাতে আমাদের ভবিষ্যৎ বেড়ে উঠবে দেশ পরিচালনায় যোগ্য হয়ে, সেই সময়টাতেই তারা অন্যের জন্য শ্রম দিচ্ছে। এভাবেই তারা বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষা থেকে। সরকারকে শিশুশ্রম প্রতিরোধ আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এই আইন অবমাননাকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শিশুশ্রম প্রতিরোধে আমাদের সামাজিকভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।

পাশাপাশি সমাজের মানুষকেও সচেতন করতে হবে। যেসব শিশু শ্রমের বিনিময়ে খাদ্য বা ভরণপোষণ পায়, তাদের দেখভাল করার জন্য সামাজিকভাবে একটি সুন্দর পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে।

শিশুশ্রমের লাগাম টেনে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ি

অনিল মো. মোমিন

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আর ভবিষ্যৎ ভালো রাখতে শিশুদের প্রতি আমাদের করণীয় অনেক। তাদের অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি। দুঃখজনক হলো, দেশে প্রায় ৫০ লাখ শিশুশ্রমিক আছে; যা ভবিষ্যতের জন্য একটি বিষফোঁড়া। দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য শিশুশ্রম বন্ধের কোনো বিকল্প নেই। শিশুশ্রম বন্ধে সংবিধানের শিশুদের অবৈতনিক শিক্ষা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা, কল্যাণ ও উন্নয়নে বিশেষ আইন রয়েছে; তা বাস্তবায়ন করতে হবে। শিশুনীতি অনুযায়ী ৫-১৪ বছরের শিশুকে কর্মে নিয়োগ না দেওয়া। শিশুশ্রমকে সামাজিকভাবে ‘না’ বলা ইত্যাদি খেয়াল রাখা। আবার বিভিন্ন সভা-সংগঠনের মাধ্যমে শিশুশ্রমিকের সুবিধা প্রদান করা যেতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষ তাদের জন্য শিশুভাতা প্রদান করা, পুনর্বাসন করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণও জরুরি। সর্বোপরি শিশুশ্রম বন্ধে প্রিন্ট ও? ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা দরকার। এভাবে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্মিলিত প্রয়াসে এমন অপরাধটি বন্ধ করে জাতির কর্ণধারদের সুরক্ষা দিতে হবে।

শিশুশ্রম রোধে সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতা জরুরি

সুকান্ত দাস

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

শিশুদের স্থান হবে মায়ের কোলে; এটাই শ্রেয়তর? কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় শিশুদের বিভিন্ন কাজ করতে। বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে শিশুদের দিয়ে কাজ করিয়ে বেতন কম দেওয়া যায়; এজন্য সেই সব প্রতিষ্ঠান শিশুকে কাজে রাখে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হলগুলোতেও দেখা যায়; যা নিতান্তই দুঃখজনক। এ ক্ষেত্রে সরকারের করা আইন মানা হচ্ছে না। শিশুশ্রম রোধে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।