ঢাকা, ১ কার্তিক (১৭ অক্টোবর) :

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ১৮ অক্টোবর ‘শেখ রাসেলের শুভ
জন্মদিন’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :

“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শহিদ শেখ রাসেলের শুভ
জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমি শেখ রাসেলের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। দিনটিকে
যথাযথভাবে উদযাপনের নিমিত্ত সরকার এ বছর প্রথমবারের মতো শেখ রাসেলের
জন্মবার্ষিকী ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা
অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ।

শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে
রাসেল ছিলেন সবার ছোটো, অনেক আদরের। রাসেল নামটি বঙ্গবন্ধু নিজেই রেখেছিলেন তাঁর
প্রিয় ব্যক্তিত্ব বিখ্যাত দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের নামে। রাজনৈতিক কারণে
বঙ্গবন্ধুকে জীবনের একটি দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়েছে কারাগারে। এজন্য শিশু রাসেল পিতার
সান্নিধ্য ও আদর-যত্ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে
স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে
নির্মমভাবে শহিদ হন। ঘাতকরা দশ বছরের ছোট্ট রাসেলকেও সেদিন রেহাই দেয়নি। ছোট্ট

রাসেল সেদিন ঘাতকদের মিনতি করে বলেছিলেন, ‘আমি মায়ের কাছে যাব’। কিন্তু ছোট্ট শিশুর
এ মিনতি ঘাতকদের মন একটুও গলাতে পারেনি। নিমিষেই তারা বুলেটের আঘাতে শিশু রাসেলের
প্রাণ কেড়ে নেয়।

মৃত্যুকালে রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা
সফল হয়নি। রাসেল আজ দেশের আনাচে-কানাচে এক মানবিক সত্তা হিসেবে বেঁচে আছেন
সবার মাঝে। দেশের শিশু-কিশোর, তরুণ প্রজন্মের কাছে রাসেল এক ভালোবাসার নাম ।
বঙ্গবন্ধু শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। তিনি জানতেন সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে
হলে নতুন প্রজন্মকে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শৈশব থেকেই তাদের মধ্যে
চারিত্রিক গুণাবলির উন্মেষ ঘটাতে হবে। জ্ঞান-গরিমা, শিক্ষা-দীক্ষা, সততা, দেশপ্রেম ও
নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমি আশা
করি, শিশুদের মাঝে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে তুলে ধরতে
সংশ্লিষ্ট সকলে আন্তরিক প্রয়াস অব্যাহত রাখবে।

আমি শহিদ শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা
করছি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”