যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসার গুঞ্জন, রাজনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নীতি সুদের হার বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে তার জেরে শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের মতো দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও (৯ অক্টোবর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাক স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। সেইসঙ্গে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। তবে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কার মধ্যেই গত ২২ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির খবর আসে। তাতে পতনের মধ্যে নিমজ্জিত হয় শেয়ারবাজার। টানা দুই সপ্তাহ দরপতন চলার মধ্যেই নতুন করে গুঞ্জন বেরিয়েছে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে।
যার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। সেইসঙ্গে লেনদেন কমে দেড় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে আসে। এ পরিস্থিতি সোমবার লেনদেনের শুরুতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও শেষপর্যন্ত দরপতনের তালিকায় বড় হয়েছে।
প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। এতে লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সবখাত মিলে মাত্র ২৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৭টির এবং ১৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৭ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
প্রধান মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩০ কোটি ১৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাফার্জহোলসি বাংলাদেশের ১৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৩ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- দেশবন্ধু পলিমার, ফু-ওয়াং ফুড, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, এইচআর টেক্সটাইল, জেমিনি সি ফুড, এমারেল্ড অয়েল এবং মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১২৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৪টির এবং ৪৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা।