শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ আন্দোলনে পুলিশ-ছাত্র সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে উত্তরার বিভিন্ন এলাকা। পুলিশ ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলা সংঘর্ষে এরই মধ্যে নর্দান ইউনিভার্সিটির তৌফিক নামের এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী এক ছাত্র জানায়, উনি (নিহত ছাত্র) বিএনএস সেন্টারের সামনে স্পট ডেথ হইছে। মারা গেছে এক ঘন্টা আগে। অ্যাম্বুলেন্সে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিভাবে মারা গেল জানতেই চাইলে ওই ছাত্র বলেন- পুলিশ গুলি করেছে। আমি নিজে পাঁচবার কাদানে গ্যাসের শিকার হয়েছি।

এ সময় নিহত ওই ছাত্রের লাশের ছবি দেখিয়ে ওই প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র বলেন, এই দেখেন গুলির চিহ্ন। উত্তেজিত কণ্ঠে ওই ছাত্র আরো বলেন, আমরা যদি রাজাকার হতাম তাহলে আমাদের হাতে আজকে লাঠিসোঠা থাকতো না, থাকতো অস্ত্র।

এদিকে, সকাল দশটার পর থেকে উত্তরার জমজম টাওয়ার, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হাউস বিল্ডিং, বিএনএস সেন্টার, আজমপুর, রাজলক্ষী, জসিমউদ্দিনসহ সবকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেয় ছাত্ররা। এ সময় ঢাকা-বিমানবন্দর মহাসড়কের আজমপুর পূর্ব থানার সামনে সাজোয়া যান এবং দুই শতাধিকেরও বেশি দাঙ্গা পুলিশ অবস্থান নিলে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের প্রথম সংঘর্ষ বাঁধে।

সকাল ১১টার দিকে ছাত্ররা বিভিন্ন জায়গা থেকে একত্রিত হয়ে বিএনএস সেন্টার ও আজমপুর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উঠতে চাইলে পুলিশ ছাত্রদের উপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এসময় ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ করে করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে টিয়ারশেলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ছাত্রদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।

বেলা ২টার দিকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেলের জরুরী বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, একের পর এক আহত শিক্ষার্থীকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে আসছে সহপাঠী-ছাত্ররা। এদের কারো মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে, কারো পা গড়িয়ে পরছে রক্ত।

অপরদিকে, বেলা ১১টার পর থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে একের পর এক চলতে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ। দুপুর ২টা পর্যন্ত চলতে থাকে পুলিশের মুর্হুমুর্হু টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ। এ সময় বিএনএস সেন্টার থেকে রাজলক্ষী পর্যন্ত পুরো এলাকা টিয়ার শেলের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুপুরের দিকে কালো পোশাকের র‌্যাবকেও মাঠে নামতে দেখা গেছে।