২০১৬ সাল থেকে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। সেবছর সৌদি আরব এক শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় অবনতি ঘটে।
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে এক টেবিলে মুখোমুখি হলো সৌদি আরব ও ইরান। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বৈঠকে বসেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠক করল দুই দেশ। বৃহস্পতিবার এমন খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ব গণমাধ্যম আল এখবারিয়া টুইটারে এ বৈঠকের অংশবিশেষ সম্প্রচার করেছে। সেখানে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানকে হাত মেলাতে দেখা গেছে। পেছনে প্রথাগত চীনা পেইন্টিং ও ২ দেশের পতাকা দেখা গেছে।
দুই দেশ মার্চে নিজেদের মাঝে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে ফোন কলে দুই নেতা রমজান মাসের মাঝেই এ বৈঠকে বসার বিষয়ে একমত হন। একে অপরের দেশে আবারও দূতাবাস ও কনসুলেট খোলার বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
দুই দেশকে আলোচনার টেবিলে আনতে এবং ঐক্যমতে পৌঁছাতে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
চীনের সঙ্গে সৌদি আরব এবং ইরান গত ১০ মার্চ একটি যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা করে। এটি পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়িত হওয়ার কথা রয়েছে। ত্রিপক্ষীয় বিবৃতিতে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান এবং তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এটি সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, ক্রীড়া এবং যুব ক্ষেত্রে সহযোগিতা চুক্তি সহ সকল যৌথ চুক্তির সক্রিয়তা নিশ্চিত করেছে।
এর মাধ্যমে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে। দু’দেশ যৌথ বাণিজ্যিক কাঠামো তথা জয়েন্ট চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে এই চেম্বার অফ কমার্স প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানের একজন শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবসায়ী নেতা।
গত মাসে চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে চুক্তি হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য নানামুখী তৎপরতা চলছে। তারই অংশ হিসেবে জয়েন্ট চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এদিকে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের রিয়াদ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম আল রাইসি। ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মোখবের সোমবার বার্তা সংস্থা মেহরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।