ঢাকা, ১৫ কার্তিক (৩১ অক্টোবর) :
জমির আইল উঠিয়ে সমবায়ভিত্তিক আধুনিক চাষাবাদের উদ্যোগ নিতে সংসদ সদস্যদের প্রতি
আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।
মন্ত্রী আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড-বিআরডিবি আয়োজিত জাতীয় পল্লী উন্নয়ন পদক-২০২১ প্রদান' অনুষ্ঠানে
প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন বাস্তবায়নে আমরা
সমবায়ভিত্তিতে চাষাবাদে বগুড়া ও লাকসাম দুইশো একর জায়গা নিয়ে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করি।
এই উদ্যোগ প্রথম গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বগুড়া ও লাকসাম প্রকল্প শেষ হওয়ার পরে দেখা গেল
খরচের পরিমাণ অর্ধেকে নেমেছে। অন্যদিকে লাভের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মোঃ তাজুল ইসলাম আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করে জমির আইল উঠিয়ে
দিয়ে আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সমবায়ভিত্তিক চাষাবাদ করা হলে কৃষি খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন
আসবে। তাই সকল সংসদ সদস্যদের নির্বাচনী এলাকায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান
জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, কো-অপারেটিভ, উপজেলা সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ, নন-কো-অপারেটিভ, সরকারি অথবা
বেসরকারি প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কোথায়
কোথায় দুর্বলতা আছে তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া স্বচ্ছতা এবং
জবাবদিহিতা নিশ্চিতে আইনে যদি কোনো ধরনের অসামঞ্জস্য থাকে সেগুলোও দূর করতে হবে। দক্ষিণ
কোরিয়া বাংলাদেশ থেকে কো-অপারেটিভ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করে যদি ব্যাপক অর্থনৈতিক-
সামাজিক পরিবর্তন আনতে পারে। তাহলে আমরা কেন পারবো না।
দরিদ্র গ্রামীণ জনগণের সক্ষমতা ও আয় বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির
মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে গৃহীত কার্যক্রমে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়
বিভাগ এবং এর অধীন প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্রে কাজ
করলে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ সোনার বাংলায় পরিণত হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহর পরিকল্পনা অনুযায়ী গড়ে না উঠায় এখন অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে
হচ্ছে।। কিন্তু গ্রামের সৌন্দর্য এখনও ওইভাবে নষ্ট হয়নি। তাই গ্রামগুলোকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে
হবে। পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন অবকাঠামোসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা নির্মাণ করতে হবে। তা না হলে উন্নত
দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা কঠিন হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, যারা দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
বিশ্বাস করে না, তারাই দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে। তারাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন
পরিকল্পনা বিঘ্নিত করে। দেশের উন্নয়ন আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ও প্রশংসনীয় হচ্ছে।
পল্লী উন্নয়ন পদকপ্রাপ্তদের উদ্দেশ্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের পল্লী উন্নয়নে আপনাদের
অবদান বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে আশা করি। সকলের সম্মিলিত
প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ বিশ্বে আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোঃ মশিউর রহমান এনডিসি'র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, বিআরডিবি’র মহাপরিচালক সুপ্রিয় কুমার
কুন্ডু এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ ও এর আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১০টি ক্যাটেগরিতে ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পযর্ন্ত পল্লী উন্নয়নে বিশেষ অবদানের
জন্য মোট ৬২ জনকে পল্লী উন্নয়ন পদক প্রদান করা হয়।