দাকোপ (খুলনা), ২৯ চৈত্র (১২ এপ্রিল):

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি
মোকাবিলায় সরকার উপকূলীয় এলাকার তেতাল্লিশ হাজার পরিবারের জীবিকায়নে সহায়তা প্রদান করছে।
এসব পরিবারের জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু, নিরাপদ এবং সারা বছর পানযোগ্য পানীয় জলের ব্যবস্থা নিশ্চিত
করছে। গ্রিণ ক্লাইমেট এডাপটেশন (জিসিএ) প্রকল্পের আওতায় খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ৫টি উপজেলায়
তেরো হাজার পরিবারে জন্য খানাভিত্তিক রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এ
প্রকল্প থেকে ২২৮ টি কমিউনিটি, ১৯টি প্রতিষ্ঠান ও ৪১ টি পুকুরভিত্তিক আল্ট্রা-ফিল্ট্রেশন রেইন
ওয়াটার হারভেস্টিং ব্যবস্থার মাধ্যমে ত্রিশ হাজার পরিবার সুপেয় পানিয়জলের সুবিধা পাবে।

প্রতিমন্ত্রী আজ খুলনার দাকোপ উপজেলায় গড়খালি পল্লীমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
প্রাঙ্গণে খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় বাস্তবায়িত “উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর, বিশেষত নারীদের, জলবায়ু
পরিবর্তনজনিত লবণাক্ততা মোকাবিলায় অভিযোজন সক্ষমতাবৃদ্ধিকরণ” প্রকল্পের আওতায় রেইন
ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেমের হস্তান্তর ও অপারেশন কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির
বক্তব্যে একথা বলেন। গড়খালি পল্লীমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপিত রেইন ওয়াটার
হারভেস্টিং স্থাপনাটি পঁচিশ জন উপকারভোগীর নিকট প্রতিমন্ত্রী হস্তান্তর করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন,  জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোর একটি
বাংলাদেশ অথচ জলবায়ুর পরিবর্তনে বাংলাদেশের কোনো দায় নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের
ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে
স্বাদুপানির এলাকাসমূহে লবণাক্ত পানির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। যার ফলে উপকূলীয় বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর
পানীয় জলের সহজলভ্যতা, স্বাদুপানি নির্ভর কৃষিকাজ ও জীবিকার ওপর ব্যাপক বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এর
ফলে নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঘরে খাওয়ার পানি না থাকলে তা সংগ্রহের জন্য নারীদের অনেক
কষ্ট করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের
ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে
জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি।

খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ
হারুনুর রশিদ, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের
মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী তুষার
মোহন সাধু খাঁ, ইউএনডিপি সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি সরদার এম আসাদুজ্জামান, প্রকল্প পরিচালক
মোঃ ইকবাল হোসেন, দাকোপ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুনসুর আলী খান ও দাকোপ উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা মিন্টু বিশ্বাস।

উল্লেখ্য উপকূলীয়  জনগোষ্ঠীর বিশেষত নারীদের, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবণাক্ততা
মোকাবিলায় অভিযোজন সক্ষমতাবৃদ্ধিকরণ” প্রকল্পটি ২৭৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে (সরকারি ৬৭
কোটি ১৬ লাখ এবং জিসিএফ ফান্ড ২০৯ কোটি ৭০ লাখ)  ২০১৯ থেকেব ২০২৪ সাল মেয়াদে বাস্তবায়িত
হচ্ছে। খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ৫ টি উপজেলায় ৩৯ টি ইউনিয়নে বাস্তবায়িত প্রকল্পের মোট সুবিধাভোগী

৭ লাখ ১৯ হাজার ২২৯ জন। প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য উপকূলীয় এলাকার নারীদের জলবায়ু
পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি সক্ষমতা বৃদ্ধি ও জীবিকায়ন; নারীদের অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি; সুপেয় পানি
নিশ্চিত করা এবং নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন।