ঢাকা, ২৫ কার্তিক (১০ নভেম্বর) :
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ১১ নভেম্বর সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ
চৌধুরীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯৩তম জন্মবার্ষিকীতে আমি মরহুমের
স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ছিলেন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন
বরেণ্য কূটনীতিক ও বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী। জাতির ক্রান্তিলগ্নে তিনি সাহসী ভূমিকা
পালন করেছেন। হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতের নয়াদিল্লিতে
বাংলাদেশ মিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঐ সময়ে তিনি বাংলাদেশের
স্বাধীনতার পক্ষে ভারত, ভুটানসহ বিশ্বের ৪০টির অধিক দেশের স্বীকৃতি আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখেন যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ছিল গভীর
শ্রদ্ধা। তিনি জার্মানিতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত থাকাকালে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট
স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের নৃশংসতায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য শাহাদত
বরণ করেন। মরহুম চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁর বাসভবনে রাখেন এবং তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা বিধানের উদ্যোগ
নেন।
হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে (৪১তম অধিবেশনে) প্রথম বাঙালি
হিসেবে সভাপতিত্ব করার বিরল গৌরব অর্জন করেন। পরে তিনি ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত
সাফল্যের সঙ্গে মহান জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইন্টার
পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশন (সিপিএ) এর
মতো মর্যাদাশীল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে আন্তঃপার্লামেন্টারি
সম্পর্ক স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এছাড়া তিনি জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর
প্রশ্নোত্তরপর্ব চালুসহ সংসদকে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে
অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
দেশে বিদেশে অবদান রাখার পাশাপাশি মরহুম হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী বৃহত্তর সিলেটের
উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আমাদের জাতীয় রাজনীতি, কূটনীতি এবং দেশের
উন্নয়নে মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর অবদান ও স্মৃতি জাতির কাছে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।
আমি মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”