সিলেট, ৩ আষাঢ় ( ১৭ জুন) :
সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেটের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সুনামগঞ্জের সঙ্গে পাঁচ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় লালমনিরহাটের ১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে।
সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। নগরের নদী তীরবর্তী এলাকায়ও ঢুকে পড়েছে পানি। ফলে পানিতে ভাসছে সুরমা তীরবর্তী অঞ্চল। এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যায় অসহায় হয়ে পড়েছেন মানুষ। খাবার, বিশুদ্ধ পানির জন্য চলছে হাহাকার। পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার পাঁচ উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ। লাখ লাখ মানুষ হয়ে পড়েছে পানিবন্দি। অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদফতর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ জানান, তার নির্বাচনী এলাকার সদর উপজেলায় এখন পর্যন্ত ১৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ত্রাণ হিসেবে প্রত্যেক ইউনিয়নে ২ মেট্রিক টন করে চাল দেওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাট : গতকাল বিকাল থেকে ধরলা নদীর পানি লালমনিরহাট সদর উপজেলার শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ নদীর পানির বিপৎসীমা হলো ৩১ মিটার ৯ সেন্টিমিটার। তবে তিস্তা নদীর পানি দুপুর পর্যন্ত লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২ মিটার ৬০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকালে কমে ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সিরাজগঞ্জ : টানা আট দিন যমুনার পানি সিরাজগঞ্জে পয়েন্টে দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এক-দুই দিনের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে বলে পাউবো জানিয়েছে। এ ছাড়াও অভ্যন্তরীণ নদ-নদী করতোয়া, বড়াল, হুড়াসগর, ইছামতীসহ চলনবিলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
নেত্রকোনা : কয়েক দিন ধরে টানা বর্ষণে নেত্রকোনায় বাড়ছে নদ-নদীর পানি। পাহাড়ি ঢলে ভারতের বাঘমারা থেকে আসা দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর পানি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। কংস, মগড়া, উব্দাখালি, নেতাই, ধনু, ঘোরাউতরা, গুমাইসহ বাড়ছে অন্যান্য নদীর পানিও।
কুড়িগ্রাম : উজানের পাহাড়ি ঢলের পানি কমতে থাকায় কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার আকস্মিক সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে কাঁচা-পাকা সড়ক এখনো জলমগ্ন থাকায় যোগাযোগ নিয়ে ভোগান্তি কমেনি বন্যার্তদের। অনেককেই কলা গাছের ভেলা বানিয়ে চলতে হচ্ছে। এখনো ৩৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি থাকায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।