ঢাকা, ২৩ অগ্রহায়ণ (৮ ডিসেম্বর) :
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য
ফুটবল দল গঠন এবং সেই ফুটবল দল ম্যাচ খেলে অর্থ সংগ্রহ করে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রদান করা
বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।
প্রতিমন্ত্রী আজ ঢাকায় বাফুফে ভবনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আয়োজিত
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশের একটি
ফুটবল দল দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত অর্জন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে অর্থ
সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনী ফুটবল খেলায় অংশ নেয়। এই দলটি স্বাধীন
বাংলা ফুটবল দল নামে পরিচিত ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধকালীন প্রথম ফুটবল দল এটি।’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল অবিচ্ছেদ্য অংশ উল্লেখ করে
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের ক্রান্তিকালে বল পায়ে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করেন ফুটবলাররা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা উঠলে তাই স্বাধীন বাংলা ফুটবল
দলের নাম উচ্চারিত হবেই।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ফুটবল খেলে দর্শকদের বিনোদন দেওয়া যাদের কাজ ছিল তারা সে
উত্তাল সময়ে বসে থাকেননি। পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে তাঁরা খেলার মাঠে
সৃষ্টি করেছিল মুক্তিযুদ্ধের আরো একটি ফ্রন্ট। দেশকে শত্রুমুক্ত করতে তাঁদের কণ্ঠে ধ্বনিত
হয়েছিল স্বাধীনতার স্লোগান। তাঁদের হাতে হয়তো অস্ত্র ছিল না, কিন্তু মহান মুক্তিযুদ্ধে পায়ের
ফুটবলটাই হয়ে উঠেছিল অস্ত্রের মতো ধারালো। তাঁদের খেলার মধ্যেই মিশে ছিল প্রতিবাদের ভাষা।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের পতাকাতলে এই ফুটবলাররা ভারতের বিভিন্ন শহরে ১৭টি প্রদর্শনী
ম্যাচ খেলে ১৬ লাখের বেশি ভারতীয় রুপি মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে প্রদান করে। দেশের স্বাধীনতার
জন্য ভিনদেশে প্রীতি ম্যাচ খেলে অর্থ সংগ্রহ বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেই বিরল।
এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার
সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের মাহেন্দ্রক্ষণে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের
পক্ষ থেকে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সকল সদস্যকে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে বলে জানান
প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রাখায় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে স্বাধীনতা
পুরস্কার প্রদানের জন্য আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ আখতার হোসেন, জাতীয় ক্রীড়া
পরিষদের সচিব পরিমল সিংহ, বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য
মাহফুজা আক্তার কিরণ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু নাইম সোহাগসহ অন্যান্য কর্মকর্তা
উপস্থিত ছিলেন।