ঢাকা, ১৪ ফাল্গুন (২৭ ফেব্রুয়ারি):

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন-
সংগ্রামে শহিদ সেলিম ও দেলোয়ারের ৩৮তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান
করেছেন :

“বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ২৮ ফেব্রুয়ারি এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৮৪
সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছাত্রলীগ নেতা সেলিম ও দেলোয়ার
স্বৈরাচারবিরোধী মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে নিহত হন।
তৎকালীন স্বৈরশাসকের নির্দেশে পরিচালিত এ হত্যাকাণ্ড ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।
আমি শহিদ ছাত্রনেতা সেলিম ও দেলোয়ারসহ গণতন্ত্রের জন্য আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদকে
শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি
অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁরই নেতৃত্বে দীর্ঘ নয়
মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর আমরা কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জন করি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে আবারো গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা
রুদ্ধ হয়। উত্থান ঘটে স্বৈরশাসনের। এদেশের ছাত্রসমাজ এর বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়াই সংগ্রাম
চালিয়ে গেছে। শহিদ সেলিম ও দেলোয়ারের মৃত্যুতে ঢাকাসহ দেশব্যাপী গণতন্ত্রকামী মানুষের মিছিলে
প্রকম্পিত হয় রাজপথ, বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সারাদেশ। এর ফলশ্রুতিতে স্বৈরাচারের পতন
ত্বরান্বিত হয় এবং ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে।

ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলে দেশে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত
হয়েছে, জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার ফিরে পেয়েছে। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এ আন্দোলনে
অনেকে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে গেছেন। তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এ গণতন্ত্রের
অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সকলে সচেষ্ট থাকবেন এটাই আমার প্রত্যাশা।
আমি শহিদ ছাত্রনেতা সেলিম ও দেলোয়ার এর রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
জয় বাংলা।

খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”