নিজস্ব প্রতিবেদক: একজন মানুষের কাছে পুরো গ্রামের মানুষ জিম্মি! আধুনিক যুগে এসেও এমন বিরল ঘটনার নজির দেখা যাবে ভোলার চরফ্যাশন থানার আমিনাবাদ ইউনিয়নের হালিমাবাদ গ্রামে। সেখানকার ৩ নং ওয়ার্ডের মো. কালিমুল্লাহ পন্ডিতের ছেলে মো. বিল্লাল হোসেনের অত্যাচারে গ্রামবাসী আজ চরম ভীত ও অসহায়।
গত ১৭ মার্চ চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সামছুল আলম (৩৬)-কে প্রকাশ্যে রাস্তায় রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে বিল্লাল। এ সময় সামছুল আলমের চিৎকারেও আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেনি শুধু বিল্লালের ভয়ে।
পরে আহত সামছুল আলমকে প্রথমে চরফ্যাশন হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বরিশাল সদর হাসপাতাল থেকে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় সামছুল আলম চরফ্যাশন থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
অনেক বিলম্বের পর আজ ২৩ মার্চ একটি জিডি নিয়েছে পুলিশ। জিডি নং: ৯২০। এক সপ্তাহ পার হলেও পুলিশ বিল্লালের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখনো এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযুক্ত বিল্লাল।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, বিল্লালের ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে কিছু প্রভাবশালী। এবং বিচারের নামে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করতে চাইছে। এর আগেও বিল্লালের এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। ২০২৪ সালে এক সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টাকালে বিল্লাল ধরা পড়ে। ওই সময় প্রবাসীর ছোট ভাই ধরে ফেললে বিল্লাল তাকে কামড়ে হাতের আঙ্গুল ছিঁড়ে পালিয়ে যায়। তখনও থানায় মামলা করতে গেলে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাধা দেয় এবং স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে।
গত ৫ আগস্টের পরে বিল্লাল প্রবাসীর পরিবার থেকে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে বলেছে যে, ওই বিচারে তার ৫ লক্ষ টাকা গেছে এবং হুমকি দিয়েছে, টাকা না দিলে শান্তিতে থাকতে পারবে না।
গ্রামবাসী জানায়, বিল্লালের এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নতুন নয়। সে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জঘন্য কাজ করে আসছে, কিন্তু কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। বিল্লাল নিজেকে বিএনপির কর্মী বলে দাবি করে এইসব অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে। অথচ এখন সে এলাকার সাধারণ মানুষকে আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে ট্যাগ দিয়ে হয়রানি করছে।
এ বিষয়ে চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
গ্রামে শান্তি ফেরাতে চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি গ্রামবাসীর।