ঢাকা, ৩ পৌষ (১৮ ডিসেম্বর):
এ বছরের ডিসেম্বর নাগাদ প্রক্রিয়াধীন আবেদন সহ সর্বমোট ৫৫ লাখ ৭৪ হাজার ৭৩৪টি
আবেদন অনলাইনে পাওয়া যায় এবং ৪৪ লাখ ১৪ হাজার ৩১৯টি আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে
২০২০-২১ অর্থ বছরে প্রায় ২২ লাখ ই-নামজারি আবেদনের মধ্যে ১৯ লাখ আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে।
প্রতিবছর গড়ে ২২ লাখ নামজারি আবেদন করা হয়।
ক্রয় সূত্রে বা উত্তরাধিকার সূত্রে অথবা যেকোন সূত্রে জমির নতুন মালিক হলে নতুন
মালিকের নাম সরকারি খতিয়ানভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে নামজরি বলা হয়। ভূমি জরিপকালে ভূমি
মালিকের মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকে “খতিয়ান” বলে। ই-নামজারিসহ অন্যান্য
সব ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ ‘ডিজিটাল
বাংলাদেশ’-এর একটি অংশ। ই-নামজারি কার্যক্রম ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখ বাংলাদেশের ৭টি
উপজেলায় পাইলট আকারে শুরু করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী দুবাইয়ে জাতিসংঘের
এক অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জাতিসংঘ পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০২০ গ্রহণ
করেন। ভূমি মন্ত্রণালয় জাতিসংঘ পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত যেকোনো পর্যায়ে
বাংলাদেশের প্রথম সংস্থা/প্রতিষ্ঠান।
ভূমিসেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে ২৫ জুলাই ২০১৭ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে
অনুষ্ঠিত এক সভায় ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলমান উদ্যোগসমূহ পর্যালোচনা করা হয়। ওই সভায় পাইলট
আকারে গৃহীত ই-নামজারি সিস্টেমটি পর্যবেক্ষণপূর্বক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ দ্রুত সারা দেশে ই-নামজারি বাস্তবায়নের নির্দেশনা
প্রদান করেন। সে অনুযায়ী ভূমি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ভূমি সংস্কার বোর্ড উপজেলা ও
ইউনিয়ন ভূমি অফিসে হার্ডওয়্যার সরবরাহসহ কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করে এবং এটুআই প্রশিক্ষক-
প্রশিক্ষণ ও ব্যবহারকারী প্রশিক্ষণে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করে।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী সার্বিক দিকনির্দেশনায় ১ জুলাই ২০১৯ হতে সারাদেশে
একযোগে শতভাগ ই-নামজারি বাস্তবায়ন শুরু হয়। বর্তমানে তিনটি পার্বত্য জেলা বাদে, বর্তমানে
উপজেলা ভূমি অফিস ও সার্কেল অফিসে এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিস ই-নামজারি চালু রয়েছে। মুজিব
শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে ১৭ মার্চ ২০২০ হতে ম্যানুয়াল আবেদন গ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে।
আইসিটি বিভাগ এবং এটুআই প্রকল্পের সার্বিক সহায়তায় ভূমি সংস্কার বোর্ডের মাধ্যমে অন্যান্য
ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনের সাথে ই-নামজারিও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রচলিত বিধান অনুযায়ী জনগণকে ভূমি অফিসে গিয়ে মিউটেশনের আবেদন করতে হতো। এতে
জনগণের সময়, অর্থ ও যাতায়াতে অনেক ব্যয় হতো। এখন কেন্দ্রীয় ভূমিসেবা
কাঠামো land.gov.bd এর মাধ্যমে সহজেই নামজারি নাগরিক আবেদন করতে পারছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন ২০২০ জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ পাবলিক সার্ভিস
অ্যাওয়ার্ড-২০২০ বিজয়ী উদ্যোগের নাম ঘোষণা করে। বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয় ‘স্বচ্ছ ও
জবাবদিহিমূলক সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিকাশ’ (Developing Transparent and Accountable Public
Institutions) ক্যাটেগরিতে জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ ইউনাইটেড ন্যাশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-
২০২০ (United Nations Public Service Award 2020/ জাতিসংঘ জনসেবা পুরস্কার ২০২০) অর্জন করে।
গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে স্থানীয় সময় সকাল ১০ টা ৩০
মিনিট মদিনাত জুমেইরাহ সম্মেলন কেন্দ্রে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও
সামাজিক বিষয়ক বিভাগ কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত ‘ইউনাইটেড ন্যাশনস পাবলিক সার্ভিস
অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন। এই সময় ভূমি সচিব মোঃ
মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।