ঢাকা, ১৪ অগ্রহায়ণ (২৯ নভেম্বর) :
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, সদ্য
সমাপ্ত জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৭ এ বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আলোচনায়
বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশ, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও
ঝুঁকিপূর্ণ দেশসূহের পক্ষে সফলভাবে কার্যকর ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। ‘হাই
লেভেল সেগমেন্টে’ বাংলাদেশের পক্ষে প্রদত্ত ‘কান্ট্রি স্টেটমেন্টে’ ২০২৫ সাল
পর্যন্ত প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান নিশ্চিত করা এবং
দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফাইড
গোল অন ক্লাইমেট ফাইন্যান্স’ আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জনের জন্য
জোরালো আহ্বান জানানো হয়েছে।
আজ পরিবেশ অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘২৭তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ
২৭) : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায়
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোকে ২০২৫ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশসমূহে
অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণ করা, জলবায়ু অর্থায়নের সংজ্ঞা চূড়ান্ত করা এবং
জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদান করার জন্য বাংলাদেশের
পক্ষে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ‘লস এন্ড ড্যামেজ’
এড়ানো, কমানো এবং মোকাবিলার জন্য একটি অর্থায়ন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার
অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, UNFCCC-ভুক্ত ১৯৭টি সদস্য রাষ্ট্র দীর্ঘ আলোচনার
পর ২০ নভেম্বর ভোরে ‘শার্ম আল শেখ ইমপ্লিমেন্টেশন প্ল্যান’ গ্রহণসহ
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, সম্মেলনে অধিক বিপদাপন্ন
উন্নয়নশীল দেশসমূহে ‘লস এন্ড ড্যামেজ’ এর ক্ষতিপূরণের জন্য নতুন একটি ফান্ড
গঠন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কপ-২৮-এ উক্ত তহবিল কার্যকর
করার জন্য এবং এর বিস্তারিত পরিকল্পনা ঠিক করার জন্য একটি ‘ট্রাঞ্জিশনাল
কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, সম্মেলনে ‘লস এন্ড ড্যামেজ’ চূড়ান্ত করে এর হোস্ট
নির্ধারণ এবং উপদেষ্টা কমিটি গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। দেশসমূহ
‘গ্লোবাল গোল অন এডাপটেশন’ এর কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে সম্মত হয়েছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘এডাপটেশন ফান্ড’-এ ২৩০ মিলিয়ন ইউএস ডলার প্রদানের
অঙ্গীকার করা হয়েছে। ন্যাপ বাস্তবায়নের জন্য অর্থায়নে গুরুত্ব প্রদান করা
হয়েছে। এছাড়াও জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস আগামী পাঁচ বছরের
মধ্যে পৃথিবীর প্রত্যেককে আগাম সতর্কতা ব্যবস্থার মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখার জন্য
৩.১ বিলিয়ন ডলারের একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মতো অধিক বিপদাপন্ন উন্নয়নশীল
দেশসমূহে ‘লস এন্ড ড্যামেজ’ এড্রেস করার জন্য নতুন একটি তহবিল গঠন করার
সিদ্ধান্তসহ ‘শার্ম আল শেখ ইমপ্লিমেন্টেশন প্ল্যান’ পৃথিবীর সকল দেশ কর্তৃক
অভিনন্দনের সাথে গৃহীত হয়েছে, তবে এর সফল কার্যকারীতা নির্ভর করবে এর
যথার্থ বাস্তবায়নের ওপর। আমরা আশা করি, বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলো জলবায়ু
পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় আরো তৎপর হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের
সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের
উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়
সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।