সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক দখল করার কথা ঘোষণা করেছে তুরস্ক সমর্থিত বিদ্রোহীরা। আর এর মাধ্যমে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হলো বলেও তারা ঘোষণা করেছে।
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিমানে করে ইতোমধ্যেই রাজধানী ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। তার বিদায়ের পরপরই দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরকারি বাহিনী সরে যায়। সরকারি বাহিনী জানিয়েছে, তাদের সৈন্যরা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ছেড়ে চলে গেছে। আর বিদ্রোহীরা সরকারি টেলিভিশন ও রেডিও স্টেশন দখল করার দাবি করেছে। তারা অন্যান্য স্থাপনার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করছে।
সিরিয়ার বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, ‘স্বৈরাচার বাশার আল-আসাদ পালিয়ে গেছেন। আমরা দামেস্ককে স্বৈরাচার বাশার আল-আসাদমুক্ত বলে ঘোষণা করছি।’
এর আগে দাবি করা হয়, পর্যবেক্ষণকারী ইউনিটগুলো রাতেই দামেস্কে প্রবেশ করে। তারা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সন্ধান করছে। তবে তাকে তারা পায়নি।
শনিবার এক দিনে সিরিয়ার চারটি নগরী দখল করার পর বিদ্রোহীরা রাজধানী দখল করার দিকে মনোযোগ দেয়। দারা, কুনিত্রা, সাওয়াদা ও হোমস শনিবার বিদ্রোহীরা দখল করে।
শনিবার সিরিয়াবিষয়ক জাতিসঙ্ঘ বিশেষ দূত, গেইর পেডারসান ‘সুশৃঙ্খলভাবে রাজনৈতিক পরিবর্তন’ নিশ্চিত করতে জেনেভায় জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন। কাতারে বার্ষিক দোহা ফোরামে ভাষণ দেয়ার সময়ে তিনি বলেন সিরিয়ার পরিস্থিতি মিনিটে মিনিটে পাল্টাচ্ছে। আসাদের প্রধান আন্তর্জাতিক সমর্থক দেশ রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ বলেন তিনি ‘সিরিয়ার জনগণের জন্য দুঃখ বোধ করছেন’।
দামেস্কে লোকজন তাদের সরবরাহ জমিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। হাজার হাজার লোক দেশ ত্যাগের উদ্দেশে লেবাননের সাথে সিরিয়িার সীমান্তের দিকে চলে গেছেন। সেখানকার একজন বাশিন্দা এপিকে জানান যে রাজধানীর বহু দোকান বন্ধ ছিল এবং যেগুলো এখনো খোলা রয়েছে সেখানে চিনির মতো প্রধান খাদ্যের ঘাটতি রয়েছে। কোনো কোনো দোকানে স্বাভাবিক দামের চেয়ে তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি করা হচেছ।
প্রতিশোধের ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাসিন্দা বলেন, ‘পরিস্থিতি বড় অদ্ভূত। আমরা এতে অভ্যস্ত নই। লোকজন উদ্বগিন রয়েছেন যে ( দামেস্কে) লড়াই হবে, কী না।”
২০১৮ সালের পর এই প্রথম বিরোধী বাহিনী দামেস্কের বাইরে পৌঁছে গেছে। সেই সময়ে এক বছর ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর সিরীয় বাহিনী ওই সব এলাকা আবার দখল করে নেয়। জাতিসঙ্ঘ বলছে যে সাবধানতা হিসেবে তারা অত্যাবশকীয় নন এমন কর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। সূত্র : আল জাজিরা, সিএনএন, ভিওএ এবং অন্যান্য