নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ব ইজতেমা ময়দান এলাকায় দোকানপাটে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দুই হামলাকারীকে আটক করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
উত্তরার সব হামলাকারী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ব ইজতেমা চলাকালে ইজতেমা মাঠের পশ্চিম পাশের রানাভোলা এভিনিউর কিছু ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি তাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদা দাবি করছে। সংবাদটি পেয়ে দুপুর ৩টার দিকে আইইউবিএটির শিক্ষার্থী ও উত্তরায় বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সেখানে গেলে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় চাঁদাবাজ চক্র। হামলায় তিনজন আহত হয়েছেন বলে উত্তরা প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার আইইউবিএটির শিক্ষার্থী ওমর ফারুক জানান, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করে ১৭ বছরের ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার থেকে মুক্তি পেয়েছি। তখন যেভাবে চাঁদাবাজি ও দখলদারি চলছিল, ঠিক এখনো সেই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। দল বদলের সঙ্গে চাঁদাবাজির হাতবদল হয়েছে শুধু।
তিনি আরও বলেন, নতুন দেশে সাধারণ ছাত্র-জনতা ও মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা দিনে দিনে হতাশায় পরিণত হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে সারাদেশে চাঁদাবাজি, দখলদারি ও অন্যান্য অপকর্মের ফলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মানুষের গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে।
হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে যুবদলের নাম করে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করা হয়। আমরা কয়েকজন ছাত্র প্রতিবাদ করলে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করায় শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালে চাঁদাবাজরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলার সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই হামলাকারীকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন সাব্বির মিয়া (২২) ও ফজলে রাব্বি (২৮)। তারা ইজতেমা এলাকায় চাঁদাবাজি কার্যক্রম ও হামলায় জড়িত ছিল বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর বরাবর ৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ব্যবসায়ী। এজাহার সূত্রে জানা যায়, হামলাকারীরা এক শিক্ষার্থীর দোকানে এসে জানায়, এখানে দোকান করতে হলে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা না দিলে এখানে দোকান করতে দেব না।
তাৎক্ষণিক বিষয়টি আইইউবিএটির ছাত্রদের জানালে শিক্ষার্থীরা দোকানে এলে আসামিরা চাঁদার টাকার জন্য জোর জবরদস্তি করে। এক পর্যায়ে আসামিদের দাবি করা চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র সমন্বয়ক ওমর ফারুক (২৫)-কে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরে এবং শিক্ষার্থীদের এলোপাথাড়ি মারপিট করে।
এদিকে, হামলার ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা চাঁদাবাজি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।