ঢাকা, ২২ কার্তিক (৭ নভেম্বর) :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী  আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশে শ্রমমানের
অধিকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রণীত রোডম্যাপের বাস্তবায়ন কার্যক্রম পরিকল্পনা মতো
এগিয়ে চলছে। সরকার শুরু থেকেই সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা অনুযায়ী অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এ
রোডম্যাপ বাস্তবায়নে কাজ করছে। তিনি জানান, শ্রমখাতে বিরাজমান ছোটখাট বাধাসমূহ দূর
করার জন্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ এবং এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সরকার নিরলসভাবে
কাজ করে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের শ্রমমানের  উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
গতকাল ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও)
গভর্নিং বডির ৩৪৩তম সভায় আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভায় বাংলাদেশে শ্রমমানের
অধিকতর উন্নয়নে ২০২১-২৬ সময়কালে বাস্তবায়নের জন্য প্রণীত রোডম্যাপের বাস্তবায়ন
অগ্রগতি তুলে ধরেন তিনি। চলতি মাসের এক তারিখ থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আইএলও-
এর গভর্নিং বডির এ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৩ নভেম্বর  পর্যন্ত তা চলবে।
আইএলও-কে আইনমন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা
ইতিমধ্যেই জবরদস্তি-শ্রম সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন ২৯ এর প্রটোকল
অনুসমর্থনের বিষয়টি অনুমোদন করেছে। এছাড়া, শ্রমসাধ্য কাজে নিয়োগের ন্যূনতম বয়স
সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন ১৩৮ অনুমোদনের বিষয়ে ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি
হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনে সহযোগিতা করার জন্য শ্রম অধিদপ্তরের
প্রতিটি অফিসে প্রি-অ্যাপ্লিকেশন সার্ভিস ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। তৈরি পোশাক
শিল্পখাতেও ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা ২০১৩ সালের ১৩২টি থেকে বেড়ে ২০২১ সালে
১০৪৫টিতে উন্নীত হয়েছে। এ বছর ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের সফলতা প্রায়
৯০ শতাংশ।
শ্রমমান পরিদর্শনের বিষয়ে মন্ত্রী জানান, শ্রম পরিদর্শকের ৮৯টি পদে পাবলিক
সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। অতিরিক্ত জনবল ও অর্থ বরাদ্দসহ
কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তরকে দ্বিতীয় ধাপে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। শ্রম
পরিদর্শকদের পেশাকে আকর্ষণীয় করার জন্য পদোন্নতির লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ে পদের
সংখ্যা বৃদ্ধি ও পদোন্নতির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ ও পদোন্নতির
ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তরের ২৩টি কার্যালয়কে লেবার
ইন্সপেকশন ম্যানেজমেন্ট এপ্লিকেশন (লিমা) এর আওতায় আনা হয়েছে। কলকারখানা ও

পরিদর্শন অধিদপ্তর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে পরিদর্শন পরিচালনা কার্যক্রম শুরু
করেছে, যা স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার জাতীয় পেশাগত সেইফটি কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন করেছে উল্লেখ
করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বর্তমানে কারখানা পর্যায়ে ৬ হাজারের বেশি সেফটি
কমিটি কাজ করছে। অধিকন্তু শ্রমিকদের অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির জন্য কলকারখানা
ও পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের
কার্যালয়ে হেল্পলাইন চালু করেছে। তিনি বলেন, জুন ২০২০ হতে জুলাই ২০২১ সময়কালে
অনেক শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে যার মধ্যে ৪৫ শতাংশ মহিলা শ্রমিক।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ এহছানে এলাহী, জেনেভাস্থ বাংলাদেশ
স্থায়ী মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রম অধিদপ্তরের
মহাপরিচালক গৌতম কুমার, কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক  মোঃ
নাসির উদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (ইউএন) সামিয়া আনজুম,
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোঃ হুমায়ুন কবীর, লেজিসলেটিভ ও সংসদ
বিষয়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মোঃ জাকেরুল আবেদীন আইনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রদানকালে
উপস্থিত ছিলেন।