নিউইয়র্ক, ২৪ নভেম্বর :
মানব পাচারের মূল কারণগুলো বিশেষ করে জলবায়ুজনিত নাজুক পরিস্থিতি এবং সংঘাত
ও বাস্তুচ্যুতির মতো বহুমুখী কারণে সৃষ্ট মানব পাচারের কারণগুলো খুঁজে বের করে তা সমাধান
করতে হবে।
গতকাল মানব পাচার রোধে জাতিসংঘের বৈশ্বিক কর্ম পরিকল্পনার মূল্যায়নের ওপর
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের সভায় বক্তৃতাদানকালে একথা বলেন
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
এসময় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমনে শক্তিশালী আইনী কাঠামো, বহু-অংশীজনের
অংশীদারিত্ব ও কার্যকর আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বরোপ করেন বাংলাদেশের
স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, মানব পাচার একটি গুরুতর অপরাধ যা মানবাধিকার ও মানবিক
মর্যাদার মৌলিক নীতিগুলোর পরিপন্থি।
মানব পাচার রোধে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন আইন, নীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক
পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, শ্রমিক পাচারসহ মানব পাচার ও চোরাচালানের মধ্যে
যে যোগসাজস রয়েছে তা আমলে নিয়েই আমরা জাতীয় পর্যায়ে মানব পাচার বিরোধী কার্যক্রম
গ্রহণ করে থাকি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে জাতীয় কর্মপরিকল্পনাকে এসডিজি
বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ও জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার সাথে সন্নিবেশিত করেছে যা মানব
পাচার রোধে ভূমিকা রেখেছে। পাচারের শিকার ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা প্রদান ও এ বিষয়ে
সচেতনতা সুষ্টিতে এনজিও, সুশীল সমাজসহ অন্যান্য সংস্থাসমূহের কাজের স্বীকৃতি প্রদান
করেন তিনি।
বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা সম্প্রদায় মানব পাচারের
ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এর মূল কারণ হিসেবে প্রত্যাবাসনের কোনো
অগ্রগতি না থাকা বিষয়টি তুলে ধরেন যা রোহিঙ্গাদের ক্রমাগতভাবে হতাশায় নিমজ্জিত
করছে। তিনি শ্রমিক পাচার হ্রাসে শ্রম অভিবাসনের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক
পর্যায়ে আরও সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
মানব পাচার প্রতিরোধ বিষয়ক সাধারণ পরিষদ রেজুলেশন এর আওতায় দুই দিনব্যাপী
উচ্চপর্যায়ের এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মানব পাচার প্রতিরোধে বৈশ্বিক কর্মপরিকল্পনা
বাস্তবায়নের অগ্রগতি মূলায়ন করা হয়। সভায় এ বিষয়ক একটি রাজনৈতিক ঘোষণাও গৃহীত
হয়। মূল আয়োজনের পাশাপাশি বাংলাদেশ, অষ্ট্রেলিয়া, নাইজেরিয়া, কাতার, যুক্তরাজ্য ও
ইউএনওডিসি একটি উচ্চপর্যায়ের সাইড ইভেন্ট আয়োজন করে।