ঢাকা, ১৫ অগ্রহায়ণ (৩০ নভেম্বর) :
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ১ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ
পূর্তি উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি বাঙালি জাতির ইতিহাসে বিশেষ করে
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে একটি অনন্য মাইলফলক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ
উপলক্ষ্যে আমি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল
সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এ উপলক্ষ্যে ‘শতবর্ষের আলোয় ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক বিশেষ স্মারক সংকলন প্রকাশের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
এই উপমহাদেশে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯২১ সালে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। উচ্চশিক্ষার বিস্তার, মানসম্পন্ন গবেষণা, জ্ঞান-
বিজ্ঞানের প্রসার, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি এবং আধুনিক ও প্রগতিশীল
সমাজ গঠনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিবুদ্ধির প্রাঙ্গণ থেকেই দেশের
সাধারণ মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন। ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, মহান
মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন
করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও বুদ্ধিজীবী
নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমি তাঁদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি যারা জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণে নিরলস কাজ
করেছেন তাদের প্রতিও রইল অনিঃশেষ কৃতজ্ঞতা।
বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ এবং অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন জাতি
গঠনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য অবদানরেখে চলেছে। একশ’ বছরের পথ পরিক্রমায় ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় জাতিকে যা কিছুই উপহার দিয়েছে তা নিঃসন্দেহে গর্ব ও গৌরবের। সময়ের
সঙ্গে জাতির চাহিদা ও প্রত্যাশাও বেড়েছে। মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ ও সমাজের চাহিদা
মেটাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে
উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজন জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল শাখায় কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করবে এবং দেশ ও
জাতিকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে-এ প্রত্যাশা রইল।
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল কর্মসূচির
সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”