ঢাকা, ৭ মাঘ (২১ জানুয়ারি) :
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বাঘ রক্ষায়
বিশ্বের ১৩টি বাঘ সমৃদ্ধ দেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার
বাঘ সংরক্ষণে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, যৌথ কুয়ালালামপুর
বিবৃতি বাস্তবায়ন বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি ও স্থিতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আজ বাঘ সংরক্ষণ বিষয়ক ৪র্থ এশিয়া মন্ত্রী
পর্যায়ের সম্মেলনে তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এসব কথা
বলেন। মালয়েশিয়ার পানি, ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি তাকিউদ্দীন বিন হাসান
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এবং ভুটান, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মিয়ানমার,
মালয়েশিয়া, নেপাল, রাশিয়ার মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যগণ এবং বাঘ সমৃদ্ধ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা
সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার অন্যান্য বন্যপ্রাণীসহ আমাদের জাতীয় প্রাণী
সংরক্ষণে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং
উন্নতির জন্য সংবিধানে একটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও
নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এ বাঘ শিকারের জন্য ২-৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ১ মিলিয়ন টাকা
জরিমানার বিধান রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার জাতীয় বাঘ পুনরুদ্ধার কর্মসূচি (২০১৭-
২০২২) এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৮-২০২৭) বাস্তবায়ন
করছে যার মধ্যে রয়েছে বাঘ জরিপ; জেনেটিক অধ্যয়ন; সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ড্রোন দ্বারা
স্মার্ট টহল ও পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি । এছাড়া, সুন্দরবন ও বেঙ্গল টাইগারের সুরক্ষা ও সংরক্ষণ
নিশ্চিত করতে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য
সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, বাঘ মানব সংঘাত প্রশমিত করতে বাংলাদেশ সরকার ভিলেজ টাইগার
রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি), কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটি (সিএমসি) এবং কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ
(সিপিজি) গঠন করে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রমে নিয়োজিত
করেছে। বন্যপ্রাণী শিকার ক্ষতিপূরণ বিধিমালা, ২০২১-এ বাঘের হাতে নিহত ব্যক্তির জন্য ৩
লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। শাহাব উদ্দিন বলেন, বন্যপ্রানী সংরক্ষণে
ভারতের সাথে আমরা সহযোগিতা জোরদার করেছি এবং ২০১১ সালে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল
টাইগার সংরক্ষণের জন্য একটি প্রটোকল স্বাক্ষর করেছি।
উল্লেখ্য, বাঘ সংরক্ষণে ১৯-২১ জানুয়ারি ২০২২ আয়োজিত ৪র্থ এশিয়া মন্ত্রী পর্যায়ের
সম্মেলনে বন্য বাঘের সংখ্যা এবং এর শিকার স্থিতিশীল করার পাশাপাশি বাঘের সুরক্ষা নিশ্চিত
করা এবং বাঘের আবাসস্থলের অবক্ষয় রোধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা
হয়েছে। সম্মেলনে বাঘ ও এর শিকার এবং আবাসস্থল রক্ষার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার
করার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত
গ্রহণ করা হয়েছে এবং পারস্পরিক জ্ঞান বিনিময়ের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা এবং বাঘ
সংরক্ষণের জন্য আন্তঃসীমান্ত এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করার বিষয়ে
অংশগ্রহণকারীরা ঐকমত্য হয়েছে।