ঢাকা, ৪ আষাঢ় (১৮ জুন) :
দেশের ১০ জেলার ৬৪টি উপজেলা বন্যাকবলিত বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ
ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ এনামুর রহমান। তিনি বলেন, বন্যাকবলিত
এলাকার মধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। বলা হচ্ছে, ১২২
বছরের ইতিহাসে সিলেট ও সুনামগঞ্জে এমন বন্যা হয়নি।
আজ সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত দেশের বন্যা
পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরি সংবাদ ব্রিফিং এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন,
সিলেট ও সুনামগঞ্জে আগামী দুই দিনে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হবে। আগামী
মঙ্গলবার ও বুধবার থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জে পানি কমতে শুরু করবে। তবে ওই সময়
দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যা দেখা দেবে।
গত ১৪ জুন থেকে শুরু করে উজান থেকে নেমে আসা পানি ও বন্যায় দেশের উত্তর ও
দক্ষিণাঞ্চলে এ পর্যন্ত ১০ জেলার ৬৪ উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্যোগ
ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১২২ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে এবারের বন্যা ও
পাহাড়ি ঢল।
তিনি বলেন, এবারের বন্যায় সিলেটের ৬০ শতাংশ প্লাবিত হয়েছে। আর
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুনামগঞ্জ। সুনামগঞ্জের ৮০-৯০% পানিতে ডু্বে গেছে।
তিনি বলেন, গত দুইদিনে চার ফুট করে আট ফুট পানি বেড়েছে ওই এলাকায় যা চিন্তাতীত।
মন্ত্রী জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী
একসঙ্গে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করছে। আজ রাতের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্তদের
আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, এরইমধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জে
৮০ লাখ করে নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। যা দিয়ে চিড়া, মুড়ি, বিস্কুটসহ শুকনো খাদ্য
দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া দুই এলাকায় দেড় হাজার টন চাল পাঠানো হয়েছে। হাতে পাঁচ কোটি
টাকা রয়েছে। আরো ২০ কোটি টাকা জিআর থেকে চাওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা হচ্ছে। যে কারণে
আমাদের দেশে আগামী দুই দিন বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটবে। তারপরের দুইদিনে
পানি নামতে শুরু করবে। তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলেও সব ধরনের
প্রস্তুতি রয়েছে। উদ্ধার কাজ চলছে। পর্যাপ্ত অর্থ ও খাদ্য রয়েছে। আশা করি একটা
টেকসই অবস্থানে থাকতে পারবো। তিনি আরো বলেন, দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি
সর্বক্ষণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনিটর করছেন। সব সময় খোঁজ নিচ্ছেন। তাঁর
দিকনির্দেশনা মেনেই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।